রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যিক সময়কে বাংলা সাহিত্যের প্রেক্ষাপটে প্রথম বড় ধরনের ঝাঁকুনি দিয়েছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম। কিন্তু সে ঝাঁকুনি সম্পূর্ণ অচেনা ছিল না; বড় ধরনের বিপর্যয় তাতে ঘটেনি। রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যিক সময় প্রায় সম্পূর্ণ পাল্টে গিয়েছিল কল্লোলীয়দের হাতে। তার নন্দনতাত্ত্বিক তাৎপর্য আমাদের এখনকার আলাপের জন্য জরুরি নয়।
তর্জমা : ইয়ামিন রহমান ইস্ক্রা সম্পাদকের ভূমিকা প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ রণজিৎ গুহ-র জন্ম তৎকালীন পূর্ববঙ্গের বাকেরগঞ্জের সিদ্ধকাটি গ্রামে (বাকেরগঞ্জ উপজেলা বর্তমান বাংলাদেশের বরিশাল জেলায় এবং সিদ্ধকাটি...
অবশ্যই মানহানির কবল থেকে মানুষের মর্যাদাকে রক্ষা করার বিধান থাকতে হবে। মানহানির বিফৌজদারিকরণের মানে এই নয় যে মানহানিকে পুরোপুরি বিলুপ্ত করতে হবে। এর অর্থ হল মানহানির মামলায় কেবল দেওয়ানি দায় থাকবে।
আমি মনে করি, আমাদের দাপুটে নদী-পানি-বন্যা নিয়ে ভাবনাচিন্তায় বর্তমান সমস্যা সমাধান করে ভবিষ্যত উন্নয়ন ও কল্যান নিশ্চিত করাটাই কেন্দ্রীয় প্রবণতা। আপনার বিদ্রুপ-অবজ্ঞা-লঘুকরণ-ঠাট্টা-গালাগালি এই কেন্দ্রীয় প্রবণতারই প্রকাশমাত্র। কিন্তু আমি আপনার এই প্রকাশকে অবজ্ঞা-ঠাট্টা-খারিজ করতে আগ্রহী না। আমার আগ্রহ ও উদ্দেশ্য এই দাপুটে চিন্তা ও তৎপরতাকে প্রশ্ন করা। এই প্রবল জানাবোঝার আর কাজ করার ঐতিহ্য কেন ও কীভাবে তৈরি হলো তা খোঁজা। এই ঐতিহ্যের সমস্যাগুলো কী কী পারে তার একটা প্রস্তাবনা পেশ করার চেষ্টা করা।
আধুনিকতা বেশ দুরূহ ও জটিল একটি শব্দ, কিন্তু এই আলোচনার সুবিধার্থে আধুনিকতাকে আমরা কান্টের জনপরিসরে যুক্তি প্রয়োগের ধারণাতেই সীমাবদ্ধ রাখছি। এখন একবার যখন আপনি আধুনিকতার ছাঁচে গড়ে উঠলেন, তখন প্রাক-আধুনিক সম্পর্ক ও ধারণাসমূহের উপর ভিত্তি করে একটি জনজীবন বা নাগরিক জীবন নির্মাণ করা প্রায় অসম্ভব। ভারতে জাতপাতের ভিত্তিতে যেই জুলুম তার উদাহরণ দেয়া যায়।
সংজ্ঞা অনুযায়ী, সকল হায়ারার্কিকেই প্রতিযোগীতার সামনে দাঁড় করানো উচিৎ। আমি র্যাডিকাল সমতার পক্ষে। প্রথাগত সমতা অর্থহীন, যতদিন পর্যন্ত নির্দিষ্ট কিছু মানুষ (বেশিরভাগ সময় একই মানুষগুলি) অকাল মৃত্যুর মুখে আটকে থাকে।
এই আন্দোলনের মধ্যদিয়ে বাংলায় দরিদ্র মুসলমান ও নমশূদ্ররা এতদিনকার সমধর্মী অর্থনৈতিক পাটাতনের পাশাপাশি ঐক্যের একটা নতুন রাজনৈতিক পাটাতনও নির্মাণ করতে সমর্থ হয়েছিল। ৪-৫টি জেলায় প্রায় আট লাখ দরিদ্র নমশূদ্র এবং মুসলমান চাষিদের ঐ ঐক্য চেতনার মৌলিক ভিত্তি ছিল কাস্ট সিস্টেমের বিরোধিতা এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রবল আর্তি।
জাতিত্ববোধের ইতিহাসে একুশকে ঘিরে আমাদের অনুধাবন যাই হোক না কেন, আন্তর্জাতিকতায় অভিষিক্ত হওয়ার পরে, একুশের উত্তরাধিকারী জাতিটিরই সবচেয়ে বেশি দায়িত্ব বর্তায় নিজের জাতিরাষ্ট্রের পরিসরে তাবৎ সাংস্কৃতিক জাতিস্বত্ত্বার ভাষা ও জাতিসত্ত্বাগত স্বীকৃতি নিশ্চিত করবার। একুশের চেতনার এমনতর উপলব্ধি উপযোগবাদীতা হলেও ক্ষতি কিছু নেই, কারণ ভুবনগাঁয়ের বিশ্বমানবের আবির্ভাবের লক্ষ্যে যে মানবিক রাজনীতি, তাকে সমর্থন যোগানোটা এই উপলব্ধির ইপ্সিত উপযোগই বটে।
আমাদের বাংলায় এ অঞ্চলের সাথে মিল রেখে নগরসমস্যার সমাধানগুলি আমাদেরকেই বের করে আনতে হবে। একইভাবে মাথায় রাখা প্রয়োজন যে নগরসমস্যা গ্রামীণ অঞ্চলের সমস্যার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই শহরকে আলাভাবে চিন্তা না করে সামগ্রিকভাবে চিন্তা করতে হবে।
ঔপনিবেশিক প্রভাব কাটিয়ে পুলিশকে যদি জনগণের হতে হয় এবং জনগণের সেবার মধ্য দিয়েই সরকারের দায়িত্ব পালন করতে হয়, তবে পুলিশি ব্যবস্থার চেয়েও সরকার ব্যবস্থার দৃষ্টিভঙ্গিগত পরিবর্তন অধিক জরুরি। সম্মতিভিত্তিক পুলিশিং পুলিশের একার কাজ নয়। পুলিশকে জনগণের হতে হলে পূর্বতন উপনিবেশগুলোর জন্য বিউপনিবেশায়নের রাজনীতির বিকল্প নেই।