তবে নিঃসন্দেহে বদরুদ্দীন উমর আরো আলোচিত হতে পারতেন। তিনটি গুণের সমাবেশ আছে তাঁর লেখালেখি ও কর্মতৎপরতায়। এক. তিনি সরাসরি পার্টি-করা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব; দুই. গত প্রায় ষাট বছর ধরে তিনি তুমুল সক্রিয় বুদ্ধিজীবী; তিন. একাডেমিক বা গবেষণামূলক কেতায় উৎপাদিত তাঁর বেশ কয়েকটি সন্দর্ভ প্রকাশিত হয়েছে। এ তিন গুণের একত্র-সমাবেশ বাংলাদেশে বেশ বিরল ঘটনা। কাজেই বদরুদ্দীন উমর টেক্সট-রিডিংয়ের জন্য সবসময়েই একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব।
সংজ্ঞা অনুযায়ী, সকল হায়ারার্কিকেই প্রতিযোগীতার সামনে দাঁড় করানো উচিৎ। আমি র্যাডিকাল সমতার পক্ষে। প্রথাগত সমতা অর্থহীন, যতদিন পর্যন্ত নির্দিষ্ট কিছু মানুষ (বেশিরভাগ সময় একই মানুষগুলি) অকাল মৃত্যুর মুখে আটকে থাকে।
আনন্দমঠ হিন্দু জাতীয়তাবাদের উৎকৃষ্ট উদাহরণ হিসেবে হাজির হয়। ব্রিটিশদের হটানোর জন্য এই জাতীয়তাবাদ মুসলমানদের সাথে নেয়ার বিষয়টি বিবেচনায় আনেনি। বইটির প্রথম সংস্করণ ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে হিন্দুদের লড়াই থেকে মুসলমানদের একেবারেই বাদ দেয়া হয়েছিল। দ্বিতীয় সংস্করণে যদিও শত্রু গোরা, ব্রিটিশ ও সেনা থেকে পরিবর্তিত হয়ে ‘নেড়ে’ ও ‘যবন’ হয়ে যায়। এই দুটো অবমাননাকর শব্দ দ্বারা বাংলার মুসলমানদেরকে বোঝানো হতো।
আত্মসত্তার অন্বেষণ রাজনীতি মুক্ত নয়, এবং ক্ষমতা ও আধিপত্য প্রসঙ্গ উপেক্ষা করে আলোচনা সম্ভব নয়। সাইল মায়ারাম মনে করেন, তারপরও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর স্বাধীন রাষ্ট্রগুলো আত্মসত্তার অন্বেষণ এবং আত্মপরিচয় নির্মাণের আকাক্সক্ষা উপেক্ষা করতে পাওে না।
আসলে আমাদের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বাস্তবতায়, আমাদের শাসন ব্যবস্থা বুঝার জন্য নতুন ধারনা প্রচলন জরুরী। সেই ধারনাকে আমি নাম দিতে চাই – ব্যদুর্নিবেশ। এই ধারনাটিকে এভাবে প্রকাশ করা যায় যে, এটা হলো উপনিবেশোত্তরকালে ব্যক্তিস্বার্থে সব ধরনের দুর্নীতি আর অনাচারের জবাবদিহিবিহীন উপনিবেশিক ব্যবস্থার রাজনৈতিক অর্থনীতির চর্চা।
ঔপনিবেশিক প্রভাব কাটিয়ে পুলিশকে যদি জনগণের হতে হয় এবং জনগণের সেবার মধ্য দিয়েই সরকারের দায়িত্ব পালন করতে হয়, তবে পুলিশি ব্যবস্থার চেয়েও সরকার ব্যবস্থার দৃষ্টিভঙ্গিগত পরিবর্তন অধিক জরুরি। সম্মতিভিত্তিক পুলিশিং পুলিশের একার কাজ নয়। পুলিশকে জনগণের হতে হলে পূর্বতন উপনিবেশগুলোর জন্য বিউপনিবেশায়নের রাজনীতির বিকল্প নেই।
বাংলাদেশের ১৯৭২ সালের সংবিধান যে পৃথিবীর ইতিহাসে অত্যুকৃষ্ট, সম্ভাব্য প্রায় সকল ভাল ভাল বাক্য এবং প্রতিশ্রুতি এখানে অকাতরে উপহার দেয়া আছে, এবং এর গূরুত্ব নিয়েও প্রচুর লেখা হয়েছে। সংবিধান বিষয়ক অধিকাংশ রচনা পাঠ করলে ধারণা হবে ‘৭২ সালের আদি সংবিধান থেকে বিচ্যুত হবার কারণেই বাংলাদেশের বর্তমান নিয়তি।
ভারতে সুপ্রিম কোর্ট প্রতিষ্ঠা করা হয় ১৭৭৩ সালে, কোলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গে, কোম্পানির আমলে । এর আগে ভারতের পুতুল সম্রাটের কাছ থেকে প্রথমে দেওয়ানী এবং...