সেই সময়ের একটা ধারণা দিতে হলে ,আমি সার্ত্রের বই প্রকাশিত হওয়ার পরের বছর অর্থাৎ ১৯৬১ সালকে উল্লেখ করবো। সেই বছর “সোমেন দো লা পঁসে মাক্সিস্ত”-এর মূল ঘটনা ছিল বিতর্ক যার একদিকে ছিলেন সার্ত্রে এবং জঁ ইপ্পোলিৎ, অন্যদিকে ছিলেন রজার গারুদি এবং জঁ-পিয়ের বিজিয়া। এদের মধ্যে প্রখ্যাত হেগেল বিশেষজ্ঞ জঁ এপ্পোলিৎ ছিলেন আমাদের এক্যোল নরমেল সুপিরিয়রের পরিচালক, রজার গারুদি দর্শন বিষয়ে ফরাসি কমিউনিস্ট পার্টির (Parti communiste français, সংক্ষেপে PCF) আনুষ্ঠানিক ধারার প্রতিনিধিত্ব করছেন এবং জঁ-পিয়ের বিজিয়া ছিলেন প্রতিরোধ যোদ্ধা, পদার্থবিদ, দার্শনিক এবং পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।
আসলে এভাবে পরিবর্তন আসেনা। সব মানুষের আলাদা আলাদা কাজ রয়েছে। শিক্ষক এবং নৈরাজ্যবাদী, যোগাযোগকারী বা আন্দোলনকারী, উষ্কানী দাতা এবং শান্তির অগ্রদূত, যিনি খটোমটো একাডেমিক লেখা লিখছেন, আর যে অনুবাদক সেটা সহজ করে সবার কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন, যে মানুষগুলো ঘটনার বাইরে থেকে তদবির করছে, আর যাদের দাঙ্গা পুলিশ টেনে হিঁচড়ে হাজতে পুরছে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।
তদপুরি ফুকোর মতে, আধুনিকতার শুরুর দিকে কুষ্ঠ মডেল প্লেগের ভয় থেকে উদ্ভুত ক্ষমতার নতুন মডেল দ্বারা বাতিল হয়েছে। ফুকো তাঁর এই মডেল বিস্তৃত করেন তাঁর ১৯৭৫ সালের Discipline and Punish: The Birth of the Prison বইতে।সেখানে তিনি যুক্তি দেন, সতের শতক থেকে ক্ষমতার নতুন এক রেজিম হাজির হয়: ডিসপ্লিনারি পাওয়ার। যারা স্বাভাবিক নয় [ডেভিয়েন্ট] তাদেরকে এখন আর সহজভাবে বর্জন করা হলো না, বা আটকেও রাখা হলো না। বরঞ্চ এর বদলে শিশু, সৈনিক, কর্মী, কয়েদী, গরীবসহ ‘সবাই’ কঠোর শৃঙ্খলার শিকার হলেন। শৃঙ্খলার কঠোর কাজের অনুশীলন হিসাবে এটা এভাবে তাদের শরীরকে ‘উৎপাদনক্ষম করে তোলে’।
এই চিন্তা রাজনীতিবিদদের এরকম আচরণ করা থেকে বিরত রাখতে পারেনি যেন তাঁরা বিজ্ঞানের নিছক কর্তব্যনিষ্ঠ অধীনস্ত৷ আমার মতে, যারা আক্রান্ত না তাঁদের আধা-সঙ্গনিরোধে রাখার নীতি গ্রহণ— যে নীতি খোয়ানো চাকুরি, বন্ধ হওয়া ব্যাবসা-বানিজ্য, হতাশাগ্রস্ত লোক এবং ঋণ জর্জরিত সরকারের ক্ষেত্রে বিপর্যয়কর পরিণামের পিছনে থাকাটা সঙ্গত— একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত এবং সেইভাবেই তা আলোচনার দাবি রাখে। কিন্তু এই মুহূর্তে বিজ্ঞানের প্রশস্ত উর্দির সব রাজনীতিবিদকে এই বিতর্ক থেকে আশ্রয় দিয়ে দিচ্ছে। বিদ্যমান নৈতিক সিদ্ধান্তগুলো নিয়েও কেউ আওয়াজ পর্যন্ত তুলে না। সেসব সিদ্ধান্তের ভার বিজ্ঞানের উপর।
মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান; ভাষান্তর: ডালিয়া চাকমা সম্পাদকীয় মন্তব্য: মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খানের এই প্রবন্ধটি ২০১৫ সালের ১২ জুনে নিউ এজ পত্রিকায় Securitisation of tourism in CHT...
সংজ্ঞা অনুযায়ী, সকল হায়ারার্কিকেই প্রতিযোগীতার সামনে দাঁড় করানো উচিৎ। আমি র্যাডিকাল সমতার পক্ষে। প্রথাগত সমতা অর্থহীন, যতদিন পর্যন্ত নির্দিষ্ট কিছু মানুষ (বেশিরভাগ সময় একই মানুষগুলি) অকাল মৃত্যুর মুখে আটকে থাকে।
বর্তমানে শ্রোতাদের কাছে নকল প্লট আর সস্থা আইটেম গান দিয়ে ভরা বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের জনপ্রিয়তাই বেশি কিন্তু এর কারণ রূচি বা বুদ্ধিমত্তা নয়। বাংলাদেশী আমজনতা আকর্ষণীয় এবং চিন্তা-চেতনামূলক সিনেমা থেকে বঞ্চিত । সেন্সর বোর্ডের মতো কর্তৃত্বমূলক সংস্থা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত চলচ্চিত্র প্রোডাকশনের কাঠামো উদ্যমী চলচ্চিত্র নির্মাতাদের নতুন যুগের ভাবনায় নিরুৎসাহিত করে। চলচ্চিত্রকে তার আসল উদ্দেশে পরিবেশন করতে এবং বিপ্লবী ধ্যান ধারণার প্রজনন কেন্দ্রে পরিণত হতে হলে প্রথমেই প্রপাগান্ডা ও নিয়ন্ত্রণের ঔপনিবেশিক মূল থেকে শিল্পকে উপড়ে ফেলতে হবে।
আনন্দমঠ হিন্দু জাতীয়তাবাদের উৎকৃষ্ট উদাহরণ হিসেবে হাজির হয়। ব্রিটিশদের হটানোর জন্য এই জাতীয়তাবাদ মুসলমানদের সাথে নেয়ার বিষয়টি বিবেচনায় আনেনি। বইটির প্রথম সংস্করণ ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে হিন্দুদের লড়াই থেকে মুসলমানদের একেবারেই বাদ দেয়া হয়েছিল। দ্বিতীয় সংস্করণে যদিও শত্রু গোরা, ব্রিটিশ ও সেনা থেকে পরিবর্তিত হয়ে ‘নেড়ে’ ও ‘যবন’ হয়ে যায়। এই দুটো অবমাননাকর শব্দ দ্বারা বাংলার মুসলমানদেরকে বোঝানো হতো।
কিন্তু ঔপনিবেশিক স্মৃতির বিউপনিবেশায়নের পুরো ধারণার প্রতিও আমি আগ্রহী। এর দ্বারা আমি বিনির্মাণ (deconstruction) বোঝাচ্ছি। আমাদের বোঝা দরকার উপনিবেশিক ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে যেসকল ব্যবস্থা গিয়েছে, তা আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, আফ্রিকা বা এশিয়া যাই হোক না কেন, সবগুলোকেই মনের বিউপনিবেশায়নের মধ্য দিয়ে যাওয়া দরকার। এটা উপলদ্ধি করা খুব বেশি জরুরি যে, উপনিবেশিক ব্যবস্থা প্রায় সবাইকে বিভিন্ন উপায়ে আক্রান্ত করে।
আমি তাকে বললাম, সাধারণ মানুষের ওপর গুলি ও নির্যাতনের প্রমাণ আমি নিজে দেখেছি। ‘আমার ছেলেরা সেটা করেনি,’ তিনি বললেন। তোমরা ব্রিটিশরা এখানে দাঁড়িয়ে যে সম্মান পাচ্ছো, তাদেরও (বাঙালি) একই সম্মান রয়েছে।