ফ্যাসিবাদ বিরোধী যৌথ ঘোষণা

এই সমাবেশ ঘোষণা করছে যে, বাংলাদেশের সংবিধানের এককেন্দ্রীক, অগণতান্ত্রিক ও একপদে কেন্দ্রীভূত ক্ষমতাকাঠামো বাতিল করে একটি ভারসাম্য ও জবাদিহিতামূলক, বিকেন্দ্রীকৃত গণতান্ত্রিক ক্ষমতাকাঠামো প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সেই লক্ষ্যে বিদ্যমান সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধন করে গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

রাষ্ট্রভাবনার তীব্রতর গলদ

বাংলাদেশে এই গলদ অন্য যে কোনো দেশের তুলনায় অনেক বেশি। মোটা দাগে বাংলাদেশের প্রগতিশীল দাবীদারদের মধ্যে এই সমস্যাটি মহামারি আকারে বিস্তৃত। তাঁরা নিশ্চিত নন কী ধরণের রাষ্ট্র চান। এ জন্য তত্ত্ববাগীশরাও নিজেদের মধ্যে অসংখ্য উপদলে বিভক্ত। তাঁদের রাজনৈতিক জনসম্পৃক্ততা নিতান্তই নগন্য।

রাষ্ট্রচিন্তা ৭ দফায় কি বলতে চেয়েছে?

বিগত ৫০ বছরের শাসনকালের পর্যালোচনা থেকে তাই আমরা এটা স্পষ্ট যে, দেশের মানুষকে সম্পদ পাচার এবং জুলুম থেকে বাঁচতে হলে দেশের বিদ্যমান আইনকানুন, বিশেষত রাষ্ট্র পরিচালনার সাথে যেইসব আইনকানুন সম্পর্কযুক্ত, সেগুলির পরিবর্তন করতে হবে। রাষ্ট্রক্ষমতা ভোগকারীদেরকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। আমাদের দেশের ৯৯ ভাগ মানুষই এইসব জুলুম, বেঈমানী আর অন্যায় আইন থেকে রেহাই চায়। কিন্তু কি করলে এ অবস্থার অবসান হবে এবং এ অবস্থার পরিবর্তে আমরা কেমন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে পারবো, সে সম্পর্কে তাদের সামনে স্পষ্ট কোনো ছবি নেই। তাই মানুষ হতাশ হয়ে এইসব জঘন্য অপরাধ আর জুলুমের সাথে আপোষ করেই একরকমভাবে টিকে থাকার চেষ্টা করতে বাধ্য হচ্ছে।

বিনা বিচারে হত্যার কি কোনো আইন আছে?

'বিনা বিচারে হত্যা' এই শিরোনামে বাংলাদেশ রাষ্ট্রে কোনো আইন বা আইনের কোনো ধারা নেই। কিন্তু এই রাষ্ট্রে ৭২ সাল থেকে আইন হিসাবে যা প্রচলিত আছে তা ব্যবহার করেই প্রয়োজন মতো রাষ্ট্র যে কাউকে বিনা বিচারে হত্যা করতে পারে এবং হত্যাকারীদের বিচারের আওতা থেকে রেহাই দিতে পারে।

আন্দোলন করে এখন আমরা আসলে কি চাই?

আমাদের মনে রাখতে হবে, উপনিবেশ থেকে স্বাধীন হওয়া দেশে রাষ্ট্র পরিচালনার উপনিবেশিক কাঠামো ও আইনকানুন-বিচারব্যবস্থা যতক্ষণ বহাল থাকবে ততক্ষণ নিরপেক্ষ ভোট দিয়ে যাকেই আমাদের প্রতিনিধি হিসাবে ক্ষমতায় পাঠানো হবে সে-ই নাগরিকের সাথে রাজার মতো, বড়োজোর দলীয় প্রধানের মতো আচরণ করবে; সে-ই জুলুম-অবিচার আর লুটপাট করবে। এটা আমরা ১৯৯০ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত নিরপেক্ষ নির্বাচন করে সরকার গঠন করে দেখেছি।