সাদা পোশাকে তুলে নেওয়া, গুম-ক্রসফায়ার এবং গণবিরোধী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ

প্রেস বিজ্ঞপ্তি ।। ১০ মে ২০২০

মত প্রকাশের দায়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আটক রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিদারুল ভুঁইয়াসহ সমস্ত লেখক, কার্টুনিস্ট, এক্টিভিস্ট, সমালোচক ও সাংবাদিকদের মুক্তির দাবিতে আজ সকাল ১১টায় ঢাকার প্রেসক্লাব, মোহাম্মদপুর, ইনকিলাব মোড়, ও উত্তরাসহ সারাদেশে একযোগে বিভিন্ন ব্যানারে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রচিন্তা ও বন্ধুজনদের উদ্যোগে এ আয়োজনে ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, মাগুরা, কুড়িগ্রাম (সদর), নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম), ঈশ্বরদী (পাবনা), বেড়া (পাবনা), পাকশী (পাবনা), ময়মনসিংহ, রংপুর, গাজীপুর, কিশোরগঞ্জ, রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, খুলনাসহ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় অনুষ্ঠিত হয় এবং সর্বস্তরের মানুষ সেখানে অংশগ্রহণ করেন। সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা তাঁদের ফেস্টুনে ও বক্তব্যে সংবিধান ও আদালতের বিধান লংঘন করে সাদা পোশাকে কাউকে তুলে নেয়ার তীব্র নিন্দা জানান এবং দিদার-কিশোর-মোস্তাক-কাজলসহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আটককৃতদের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেন। সেই সাথে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো সকল গণবিরোধী আইন বাতিল এবং গণবিরোধী এইসব আইন বানানোর সাংবিধানিক ব্যবস্থা সংস্কারে আহবান জানান।

ঢাকা-প্রেসক্লাবের সমুখে আয়োজিত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে রাষ্ট্রচিন্তা ছাড়াও ছাত্র অধিকার পরিষদ, ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন, ডাকসু নেতৃবৃন্দ, বিপ্লবী ছাত্রমেত্রী , মৌলিক বাংলা সহ আরো কিছু সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, লেখক, সমালোচক, এক্টিভিস্ট এবং সমাজের বিভিন্ন সচেতন মানুষ অংশগ্রহণ করেন। সমাবেশে সংহতি জানিয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা ও ডাকসুর ভিপি নুরুলহক নুর, ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাহমুদুল হাসান, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য হাসনাত কাইয়ুম, রাখাল রাহা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা করোনার মতো সর্বগ্রাসী সংকট মোকাবেলায় সবাইকে নিয়ে সম্মিলিত প্রচেষ্টার পরিবর্তে জনগণের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি, তথ্য গোপন এবং তথ্য প্রকাশের দায়ে লেখকদের গ্রেপ্তার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য সরকারকে দায়ী করেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ বণ্টনে ভয়ানক অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির কারণে সাধারণ মানুষের কষ্টের কথা উল্লেখ করেন তারা। “যারা এইসব প্রকৃত চিত্র তুলে ধরে সাধারণ মানুষকে সচেতন করছেন, সরকারকে তাদের ভুলগুলো ধরিয়ে দিয়ে সহায়তা করছেন- তাঁদেরকে সরকার অন্যায়ভাবে তুলে নিয়ে গণস্বার্থবিরোধি ডিজিটাল আইনে মামলা দিয়ে তাঁদের নাগরিক অধিকার লংঘন করছেন। এবং এর মাধ্যমে সরকার শুধু সাধারণ মানুষের স্বার্থই শুধু নয়, নিজেদেরও ক্ষতি করছেন। এর মাধ্যমে তারা ক্রমেই দেশের প্রকৃত চিত্র, সাধারণ মানুষের বাস্তবতা থেকে দূরে সরে গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছেন” বলেন বক্তারা। একইসাথে তারা সকলের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার প্রশ্নে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল, এবং এরকম ভীতিকর অন্যায় আইন তৈরির বিদ্যমান ব্যবস্থা বদলের আহবান জানান।

মহামারী দুর্যোগ মোকাবেলার কালে সাধারণ সময়ের চাইতেও সত্যের প্রকাশ ও তথ্যের অবাধ প্রবাহ বেশি গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে বক্তারা অবিলম্বে মিথ্যা মামলায় আটক সকলের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন। সেই সাথে নিবর্তনমূলক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করে নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার মাধ্যমে সকলের নিরাপদ জীবন নিশ্চিত করার দাবি করেন।

কর্মসূচী শেষে তারা নাগরিকের মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা, সকল রকমের গুম-খুন-ক্রসফায়ার বন্ধ, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো জনবিরোধী আইন বাতিল এবং এ ধরণের আইন তৈরীর উপযোগী যে ক্ষমতাকাঠামো তার পরিবর্তনের জন্য সর্বস্তরের জনমানুষকে সাথে নিয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন।

রাষ্ট্রচিন্তা
কক্ষ নং ২০৪, ইব্রাহীম ম্যানশন, ১১ পুরানা পল্টন, ঢাকা থেকে প্রকাশিত। যোগাযোগ : ০১৮১৬ ০১১ ২১৪

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *