- লেখক: রুশাদ ফরিদী
গত ডিসেম্বরের ঘটনা। উহান কেন্দ্রীয় হাসপাতালে কাজ করছিলেন লী ইয়েনলিং নামে একজন চক্ষু বিশারদ। গত পাঁচ বছরের উপরে তিনি এই হাসপাতালে কাজ করছেন। ডিসেম্বরের শেষের দিকে হাসপাতালে একদিন তিনি হঠাৎ দেখতে পেলেন সাত জন রোগীকে কোয়ারেন্টাইনের জন্য হাসপাতালে আনা হয়েছে। এই সাত জনেরই লক্ষণ ২০০৩-২০০৪ সালের দিকে ছড়িয়ে পড়া আরেকটা মারাত্মক ভাইরাস সার্স এর মতোন, প্রচণ্ড শ্বাস কষ্ট হয় এতে । এরা সবাই একটা স্থানীয় সি ফুড মার্কেট থেকে এসেছে। লী তখন উইচ্যাটে তাঁর মেডিকেল স্কুলের অ্যালুমনাই গ্রুপে একটা মেসেজ পাঠালো সাবধান করে যে সার্স এর মতন একটা রহস্যময় অসুখ ছড়িয়ে যাচ্ছে। সবাই সাবধান।
কোন ভাবে তাঁর এই মেসেজের স্ক্রীনশট চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে, ভাইরাল হয়ে যায়। চারদিন পরে তাকে পাবলিক সিকিউরিটি ব্যুরোতে ডেকে পাঠানো হয়। সেখানে তাকে বলা হয় একটা চিঠিতে স্বাক্ষর করতে। সেই চিঠিতে তাকে মিথ্যে তথ্য সরবরাহের মাধ্যমে মারাত্মক রকম সামাজিক বিশৃঙ্খলার তৈরির জন্য দায়ী করা হয়।
তখন লী একা নয়, আরো সাত আট জনের বিরুদ্ধে পুলিশ এই একরকম গুজব ছড়ানোর তদন্ত চালাচ্ছিল। এদিকে লী যথারীতি হাসপাতালে কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল। যেহেতু বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা হয়েছে তাই ডাক্তারদের কোন প্রতিরক্ষার ব্যবস্থা করা হয় নাই। এরপর জানুয়ারির দশ তারিখে তাঁর কাশি শুরু হয়, পরদিন থেকে জ্বর আর দুইদিন পরে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হোন। তাঁর করোনা ভাইরাসের চিহ্নিত হয় জানুয়ারির ৩০ তারিখে। ততদিনে অনেক দেরী হয়ে গেছে। ফেব্রুয়ারির ৬ তারিখে তাঁর মৃত্যু হয়। স্থানীয় সময় রাত সাড়ে নয়টায় মৃত্যুর ঘোষণা আসে। তখন উইবো (টুইটারের চাইনিজ সংস্করণ) তে বন্যার মতন রাগ, ক্ষোভ আর শোকের মাতম ভেসে আসতে থাকে।
লী যখন বেঁচে ছিল, সেই ডিসেম্বরের ৩০ তারিখে পোস্ট করার পরে ৩১ তারিখে উহান কর্তৃপক্ষ জানায় যে কোন গুরুতর কিছু ঘটে নাই। চিন্তার কিছু নেই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। চায়নার সরকারী পত্রিকা এর পরে জানুয়ারির ২০ তারিখ পর্যন্ত কিছুই হয় নি বলে সংবাদ ছাপিয়েছে গেছে।
এই ব্ল্যাক আউটের মধ্যে করোনা ভাইরাস তাঁর ধ্বংসলীলা ঠিকই চালিয়ে গেছে। সেই সময় আসলে উহানে দু’টো ঘটনা সমান্তরালে ঘটছিল। একটা হলো সরকারী নিয়ন্ত্রণে ঘটনাগুলোর ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করা একটা রূপ, আর আরেকটা হলো করোনা ছড়িয়ে পড়া সত্যিকারের বীভৎসতা। অনেক নাগরিক মোবাইল ফোনে ধারণ করা ভিডিওতে দেখাচ্ছিল কিভাবে প্রচণ্ড জোর প্রয়োগ করে জনসংগনিরোধে পাঠানো হচ্ছে। মানুষজনকে লাথি মারতে দেখা যাচ্ছে, চিৎকার করতে দেখা যাচ্ছে করিডোর ধরে নিয়ে যাবার সময়।
অন্য দিকে সরকারী নিয়ন্ত্রিত মিডিয়াতে দেখানো হচ্ছে ভাইরাসের রোগীরা তাঁদের হসপিটাল বেডের পাশে নাচানাচি করছে, আর হাসিখুশি স্বাস্থ্যকর্মীরা তাঁদের চুল কেটে দিচ্ছে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার জন্য।
সরকারী পর্যায়ে যখন এই ধরনের সার্কাস চলছে তখন অন্তত তিনজন নাগরিক সাংবাদিককে করোনা ভাইরাসের উপর রিপোর্ট করার জন্য উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হলো। একজন তাঁর নিজের গ্রেফতার ভিডিও করেছে, সেটা আবার ইউটিউবে প্রায় চার লাখের উপরে ভিউ হয়েছে। সমাজকর্মী জু ঝিং ইয়ংকে গোপন ডিটেনশন সেন্টারে পাঠানো হয়েছে এবং ১৫ বছরের জেল তাঁর জন্য হতে পারে অন্তর্ঘাতমূলক কার্যকলাপে অংশ গ্রহণ করার জন্য।
এখন প্রশ্ন উঠতে পারে কেন চীন এই ধরনের বিষয় ধামাচাপা দিতে চাইলো। আসলে একনায়কতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় এটা ঘটা একেবারেই অস্বাভাবিক না। শিং জিনপিং কে ধরা হয় মাও সেতুং এর পরে সবচেয়ে বেশী ক্ষমতাধর প্রেসিডেন্ট। ফলে চীনের সমগ্র প্রশাসনযন্ত্র হচ্ছে জিনপিংমুখী। সব ধরনের সংবাদ ফিল্টার হয়ে আসতে হয় এই একনায়কের সন্তুষ্টির জন্য । সেই ফিল্টারে করোনার মতন একটা প্রাণঘাতী অসুখের খবর বিশ্বের দরবারে আসার আগেই বাদ পড়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক। এর কারণ হতে পারে যে একনায়কেরা এই ধরনের দুঃসংবাদকে হয়তো ব্যক্তিগত ব্যর্থতা হিসেবে ধরেন, নিজের মহাশক্তিশালী ভাবমূর্তির জন্য সংকট হিসেবে মনে করেন। এটা এমন একটা বিষয় যে একটা বাড়ীতে মানুষজন একটা রহস্যময় অসুখে অসুস্থ, বাড়ীর প্রবল পরাক্রমশালী কর্তা ভাবছেন এটা আসলে তাঁদের পরিবারের জন্য দুর্নাম, তাই চেপে রেখে গোপনে চিকিৎসা চালাচ্ছেন। এর মধ্যে বাইরের লোকজন অনবরত আসা যাওয়া করছে, রোগ আরো ছড়িয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক নেতৃত্বের গঠন কিন্তু চীন থেকে খুব একটা দূরে নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধরা হতে পারে বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম ক্ষমতাধর রাষ্ট্রপ্রধান। জনমতে বিশ্বাস যে উনার অঙ্গুলি হেলন ছাড়া বাংলাদেশে একটি পাতাও নড়ে না। ব্যাপারটা অতিশয়োক্তি হতে পারে কিন্তু বাস্তবতা থেকে আবার খুব একটা হয়তো বেশী দূরেও হয়তো না। তাই চীনের মতন কিছু ব্যাপার স্যাপার এখানে ঘটাই স্বাভাবিক।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের জেমস পি গ্রান্ট স্কুলের একজন গবেষক, আন্তর্জাতিক ভাবে বিখ্যাত অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের সাথে মিলে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেটির মধ্যে দেখানো হয় যে সরকার যদি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না করে তাহলে মে মাসের মধ্যে পাঁচ লাখ লোক মারা যেতে পারে। সরকারকে পরিস্থিতির গুরুত্ব বোঝানোর জন্য এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ আর হতে পারে না। কিন্তু উল্টো কি হলো ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উল্টো এই গবেষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনলো যে তিনি কোন রকম অনুমতি না নিয়ে কেন প্রকাশ করেছেন। গবেষকদের তাঁদের পেশার নিমিত্তে অনবরত বিভিন্ন গবেষণা প্রবন্ধ, বই প্রকাশ করতে হয়। তখন তাঁদের নামের পাশাপাশি যেই প্রতিষ্ঠানের আছেন সেটির নামও উল্লেখ করতে হয়। যেকোন শিক্ষা বা গবেষণা প্রতিষ্ঠান এই ধরনের গবেষণাকে অত্যন্ত উৎসাহিত করে এবং সাধারণত সেই প্রতিষ্ঠানের নাম থাকলে সেটি প্রতিষ্ঠানের জন্য খুবই ইতিবাচক হয়। তাই এই গবেষকের প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করার অনুমতি না নেয়ার অভিযোগ আনাটা খুবই অস্বাভাবিক হয়েছে। এর একটি বড় কারণ হতে পারে সরকার থেকে প্রচণ্ড চাপ তৈরি করা হয়েছিল। হয়তো সেই একই চাপে আবার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষক যিনি এই গবেষণাতে ছিলেন তিনি এই গবেষণার সাথে নিজের সম্পৃক্ত থাকার কথা পুরোপুরি অস্বীকার করেছে।
এর মধ্যে আবার দুইটি সরকারী কলেজের শিক্ষককে এর মধ্যে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। ইনাদের অপরাধ ছিল যে করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে এনারা ফেইসবুকে সরকারী অদক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন । তো যেই দ্রুততায় এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হলো তাঁর একশত ভাগের এক দ্রুততায় যদি গত তিনমাসে করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেয়া শুরু হতে তাহলে আজকের এই করুণ অবস্থা অনেকাংশেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হতো। টেস্ট কিট কোথা থেকে আসে, পিপিই কিভাবে আসবে কোন পরিকল্পনা নেই, নিয়ন্ত্রণ নেই। কিন্তু যখনই কোন সমালোচনামূলক বক্তব্য আসে সেটির উপর এই প্রশাসন যন্ত্রের ঝাঁপিয়ে পড়তে কিন্তু সময় লাগেনা।
এই বিষয়টি একেবারে হাস্য রসাত্মক পর্যায়ে চলে যায় যখন খবর আসে যে সরকার একটা কমিটি গঠন করেছে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলগুলোতে যাতে করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত কোন অপপ্রচার বা গুজব না ছড়ায়। এক একটা টিভি চ্যানেলের জন্য আলাদা করে সরকারী কর্মকর্তাদের নিয়োগ করা হয়েছে । একটা দেশের সরকার কতটুকু আত্মবিশ্বাসহীন হলে এই ধরনের কাজ করতে পারে। পরবর্তীতে অবশ্য ব্যাপক সমালোচনার মুখে এটি প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়।
এছাড়াও আর যেইসব দেশে স্বৈরতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণ রয়েছে সেগুলোতে একই জিনিস ঘটছে। ফরেন পলিসিতে সম্প্রতি প্রকাশিত একটি প্রবন্ধে বলা হয়েছে করোনা ভাইরাসের মানুষের পাশাপাশি আরেকটি জিনিস শিকার করছে। সত্যিকারের তথ্য হচ্ছে করোনা ভাইরাসের আরেকটি ভিকটিম। পৃথিবীর কয়েকটি দেশে রাজনৈতিক নেতৃত্ব থেকে করোনা ভাইরাসের তথ্য গোপনের বিভিন্ন রকম চেষ্টা হয়েছে এবং হয়ে চলেছে। এর ফলে জন স্বাস্থ্যের উপর বিরাট ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে এবং এই প্রতিষ্ঠানগুলো উপর বিশ্বাস ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যেমন ইরানেও একই রকম ভাবে করোনা ভাইরাস ধামা চাপা দেয়ার চেষ্টা হয়েছে। বিবিসির তথ্য অনুযায়ী প্রায় ২৪ জন ইরানিয়ানকে গুজব ছড়ানোর দায়ে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং আরো ১১৮ জনকে সতর্ক করা হয়েছে। এদিকে ইন্দোনেশিয়ার সরকার প্রধান নিজে স্বীকার করেছেন যে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ সংক্রান্ত তথ্য প্রথম দিকে গোপন করা হয়েছে।
যখন সরকারী ভাবে তথ্য গোপনের চেষ্টা হয় তখন স্বাভাবিক ভাবেই আরো আতংক তৈরি হয়, মানুষ তখন উল্টো পাল্টা আরো অনেক জিনিস বিশ্বাস করা শুরু করে দেয়। কেউ অতি সতর্ক হয়, কেউ একেবারে পাত্তাই দেয় না। কারণ কোন তথ্য বিশ্বাস করবে আর কোনটা করবে না এই নিয়ে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। এই অবস্থায় করোনার মতন ভাইরাস আরো দ্রুত এবং মারাত্মক ভাবে ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ তৈরি হয়।
গুজবের অজুহাত তুলে সত্যকে গোপন করাটাই কিন্তু আরেকটি গুজবের জন্ম দেয়ার সমতুল্য। তাই ভয়ংকর সত্যকে চেপে রেখে চীন সরকার যেমন সব ঠিক আছে সব ভাল আছে এইরকম একটা ভাব প্রথম দুই তিন সপ্তাহ নিয়েছিল, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সেটিই ছিল করোনা ভাইরাসকে নিয়ে সবচেয়ে বড় গুজব। এই গুজব তৈরির খেসারত কিন্তু চীনকে দিতে হয়েছে। গবেষকরা বলছেন চীন যদি শুরু থেকেই তথ্য গোপন না করে, লীর মতন মানুষজনকে ভয় ভীতি দেখিয়ে চুপ না করিয়ে, যদি আন্তরিকতার সাথে করোনা ভাইরাসকে মোকাবেলা করতো তাহলে চীনের সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার ২০ থেকে ৩০ শতাংশ কম হতো। শুরুর দিকে ভুল করেও চীন মারাত্মক বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেয়েছে কারণ চীনের সেই সক্ষমতা রয়েছে। উহানে চীন ১০ দিনে একটি হাসপাতাল তৈরি করে ফেলেছে যেখানে বেশ কয়েকটি জনসঙ্গনিরোধ কক্ষ রয়েছে, ৩০টি ইন্টেন্সিভ কেয়ার ইউনিট আছে, এবং সব মিলিয়ে ১০০০ রোগীর চিকিৎসা দেয়া সম্ভব।
আর আমাদের পুরো বাংলাদেশে এখনও পর্যন্ত যদি একটা প্রতিষ্ঠানেই টেস্ট করার ব্যবস্থা রয়েছে। নিউএজ পত্রিকার খবর অনুযায়ী জানুয়ারির ২১ তারিখের পর থেকে প্রায় সাড়ে ছয় লক্ষ লোক বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। কিন্তু ১৮ই মার্চ পর্যন্ত টেস্ট হয়েছে মাত্র ৩২৬ জনের। লক্ষাধিক স্যাম্পলের কিউ তৈরি হচ্ছে, পর্যাপ্ত টেস্ট কিট নেই। তাই টেস্ট হচ্ছে না, হাসপাতালে ভর্তি নিচ্ছে না। অনেকেই মৃত্যু বরণ করছেন, কিন্তু কেন মারা যাচ্ছেন বোঝা যাচ্ছে না। ফলে সংক্রমন এবং মৃত্যুর হারে তেমন বিশাল পরিবর্তন আসছে না। তাই আসল তথ্য গোপন রেখে বাংলাদেশেও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে এই রকম গুজব প্রতিদিন শোনানো কিনা এই সন্দেহ উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। আর এই সরকারী পর্যায়ের গুজবের মাশুল আমরা কি ভয়াবহ ভাবে দিবো সেটা সামনের দিনগুলোই বলে দিবে।
লীর গল্প দিয়ে শুরু করেছিলাম। তাঁর শেষটা দিয়েই শেষ করি। ওর মৃত্যুর খবরে যখন সোশাল মিডিয়াতে প্রবল প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় তখন সরকার নিয়ন্ত্রিত গ্লোবাল টাইমস জানায় লী এখনও মারা যায় নাই, তাঁকে কৃত্রিম উপায়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। পরবর্তীকালে উপস্থিত সাংবাদিক এবং ডাক্তাররা নাম না প্রকাশের শর্তে জানায় যে সরকারী কর্মকর্তারা এসে লীর মৃত্যুর ঘটনা প্রকাশ করতে বাধা দেয়। এরপর অনেক ঘষামাজার পরে রাত আড়াইটায় মৃত্যুর সময় প্রকাশ করা হয়।
লী ইয়েনলিং সত্যি প্রকাশ করতে যেয়ে গুজবের অভিযোগে অভিযুক্ত হলো। আর তাঁর মৃত্যুর অফিসিয়াল সময়টা লিপিবদ্ধ হলো একটা সরকারী গুজব হিসেবে। লী ইয়েনলিং তাঁর মৃত্যুর শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত প্রমাণ রেখে গেছে গুজবের নামে আসল তথ্য চেপে রেখে সরকারী পর্যায়ে যেসব গুজব তৈরি হয় সেগুলোই সবচেয়ে ক্ষতিকর।
রুশাদ ফরিদী: সহকারী অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, ঢাকা বিশ্বাবিদ্যালয়